এবিএনএ : মানুষের অন্যতম খারাপ দিক হলো হিংসা-বিদ্বেষ। হিংসা-বিদ্বেষ মানবচরিত্রের অন্যতম ক্ষতিকারক ব্যাধিও। হিংসা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে বিষিয়ে তোলে। শান্তি সম্প্রীতি শৃঙ্খলা নষ্ট হয়। মানব জীবনে নেমে আসে অশান্তি-কলহ। মানবতার ধর্ম ইসলাম তাই পরস্পর হিংসা বিদ্বেষকে নিষিদ্ধ করেছে। ইসলাম শিখিয়েছে শান্তি সম্প্রীতি ও মানবতার বাণী। নবীজি দিয়েছেন মানবতার সবক। পবিত্র কোরআন বলেছে, আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে মানুষকে যা দিয়েছেন, সে জন্য কি তারা তাদের ঈর্ষা করে? [সুরা নিসা : ৫৪]
হজরত আবু মুসা আশয়ারি রা. বলেন, নবীজি সা. আমাকে এবং মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. কে ইয়ামানে পাঠান, উপদেশ দেন, তোমরা মানুষের সঙ্গে নম্র ব্যবহার করবে, কঠোর ব্যবহার করবে না। আশার কথা শোনাবে এবং তাদের মনে বিদ্বেষ সৎ সৃষ্টি করবে না। আর তোমরা দু’জনের মধ্যে সুস্পর্ক বজায় রাখবে। তখন আমি বলি, হে আল্লাহর রাসুল সা.! আমরা এমন এক দেশে যাচ্ছি, যেখানে মধু থেকে শরাব তৈরি হয়। একে বিতউ বলা হল। যব থেকেও শরাব তৈরি করা হয়, তাকে বলা হয় মিজর। মহানবী সা. বললেন, প্রত্যেক নেশাসৃষ্টিকারী বস্তু হারাম। [বুখারি : ৫৬৯৫]
হজরত আনাস ইবনে মালেক রা. বলেন, নবীজি সা. বলেছেন, তোমরা পরস্পর বিদ্বেষ ভাবাপন্ন হয়ো না, হিংসা করো না এবং একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন থেকো না। আর তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ও পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে থেকো। কোন মুসলমানের জন্য জায়েজ নয় যে, সে তার ভাই থেকে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকবে। [বুখারি : ৫৬৪৭]
হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, নবীজি সা. বলেছেন, তোমরা অনুমান থেকে বেঁচে থেকো। কারণ অনুমান বড় মিথ্যা বিষয়। আর কারো দোষ অনুসন্ধান করো না, পিছু লেগে থেকো না। একে অন্যকে ধোঁকা দিও না, আর পরস্পর হিংসা করো না, একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণ করো না এবং পরস্পর বিরুদ্ধাচরণ করো না। বরং সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকো। [বুখারি : ৫৬৪০]
নবী করিম সা. বলেছেন, তোমরা হিংসা-বিদ্বেষ থেকে নিবৃত্ত থাকবে। কেননা হিংসা মানুষের নেক আমল বা পুণ্যগুলো এমনভাবে খেয়ে ফেলে, যেভাবে আগুন লাকড়িকে জ্বালিয়ে নিঃশেষ করে দেয়। [আবু দাউদ]